হ’ত্যার দায়ে আসামির মৃ’ত্যুদ’ণ্ড সরাসরি সম্প্রচারের নির্দেশ !

নায়েরা আশরাফ নামে এক নারীকে ছুরিকা ঘাত করে হত্যার দায়ে. আসামি মোহামেদ আদেলের মৃত্যুদণ্ড, টেলিভিশনে সম্প্রচারের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। নায়েরা আশরাফ হত্যাকাণ্ড মিশরের সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা। গত মাসে রাজধানী কায়রো থেকে ১৩০ কিলোমিটার উত্তরের শহর মানসুরায় নায়েরাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে ২১ বছর বয়সী মোহামেদ আদেল। এ ঘটনায় আদেল আদালতে দোষী প্রমাণিত হন।

হত্যার আগে মানসুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ২১ বছর বয়সী নায়েরাকে বেশ কিছুদিন ধরেই উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন সহপাঠী আদেল। গত মাসে (২৮ জুন) তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে নায়েরাকে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দেন। নায়েরা ওই প্রস্তাবে অসম্মতি জানালে ছুরি বের করে তাকে উপর্যুপরি কয়েকটি আঘাত করে পালিয়ে যান আদেল। সিসিটিভি ফুটেজে ভয়াবহ এ হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য ধরা পড়ে। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হত্যাকারীকে গ্রেফতারের দাবি জোরালো হয়ে উঠতে থাকে। হত্যার দুদিনের মাথায় আদেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মানসুরার একটি আদালতে প্রায় এক মাস ধরে এই মামলার বিচার চলে। বিচারে নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেন আদেল। এরপর গত রোববার (২৪ জুলাই) মামলার প্রধান ও একমাত্র আসামি আদেলকে প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু নিশ্চিতের আদেশ দিয়ে রায় দেন আদালত। রায়ে আদালত বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা অমার্জনীয় অপরাধ। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের অপরাধ না ঘটে, সে বিষয়ক সতর্কবার্তা দিতে এই মৃতুদণ্ড রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে সম্প্রচারের নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।’

মৃত্যুদণ্ড সরাসরি সম্প্রচারের সুযোগ দিতে আইন সংশোধনের আহ্বানও জানিয়েছেন আদালত। আদালতের তরফ থেকে মিশরের পার্লামেন্টে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। দেশের রীতি অনুযায়ী আদালতের রায়ের কপি দেশটির গ্র্যান্ড মুফতি ড. শাওয়াকি আলমের দফতরেও পাঠানো হয়েছে। তিনি অনুমোদন দিলে আগামী ৬০ দিন পর যেকোনো দিন জনসমক্ষে কার্যকর করা হবে আদেলের ফাঁসির দণ্ড এবং সেই দৃশ্য দেশজুড়ে সম্প্রচার করা হবে।

এদিকে এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। আদেলের আইনজীবী বলেন, ‘এ রায়কে চ্যালেঞ্জ করার জন্য এখনো ৬০ দিন সময় আমাদের হাতে রয়েছে।’ বিশ্বের যেসব দেশে অধিক হারে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা ও কার্যকর করা হয়, তার মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে মিশর। অনেক সময় চাঞ্চল্যকর মামলার আসামিদের মৃত্যুদণ্ড টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারও করা হয়। এর আগে সবশেষ ১৯৯৮ সালে রাজধানী কায়রোতে একই সঙ্গে তিন ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দৃশ্য টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *